বন্দরে ৭ মাসে ১০ লাশ উদ্ধার-জনমনে আতঙ্ক - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

সোমবার, ১৭ জুলাই, ২০২৩

বন্দরে ৭ মাসে ১০ লাশ উদ্ধার-জনমনে আতঙ্ক


নিজস্ব প্রতিনিধি
: নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ৭ মাসে রাজনৈতিক কর্মী, শ্রমিক, মাদক ব্যবসায়ী, ও সাধারণ মানুষের ১০টি লাশ উদ্ধার হয়েছে। উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে ৯ জন পুরুষ ও একজন নারী। আধিপত্য বিস্তার, মাদকব্যবসা নিয়ন্ত্রণ সহ নানা কারণে এসব হত্যাকান্ড সংঘটিত হয়। এসব লাশ উদ্ধারের ঘটনা ঘটলেও এসব হত্যার কারণ উৎঘাটনে ব্যর্থতা, প্রকৃত আসামিরা গ্রেফতার না হওয়া হত্যাকান্ডে ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে বলে সচেতন মহল মনে করেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ঘটনায় প্রকৃত আসামিদের গ্রেফতার ও মামলার তদন্তে অগ্রগতি না থাকায় বন্দরের মানুষ শঙ্কিত ও উদ্বিগ্ন। সর্বত্র বিরাজ করছে আতঙ্ক, সৃষ্টি হয়েছে নিরাপত্তাহীনতা।

এছাড়াও বেড়েছে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, ধর্ষণ ও একের পর এক খুন সহ রাজনৈতিক অস্থিরতা। এরই মধ্যে ভয়াবহভাবে যুক্ত রয়েছে মাদক বিক্রির মহোৎসব ও কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত। এছাড়াও প্রতিনিয়তই বন্দরে কোথাও না কোথাও চুরি, ডাকাতি সংঘটিত হওয়ায় ভূক্তভোগি মহল উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।  

গেলো বছরের ১৯ অক্টোবর বন্দর থানায় অফিসার ইনচার্জ হিসেবে যোগদান করেন আবু বকর সিদ্দিক। তিনি যোগদানের পর এই পর্যন্ত ৭ মাসে ১০টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৪টি হত্যাকান্ড অত্যন্ত নৃসংশ। 

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত মোট ১০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। একের পর এক খুন হলেও সন্ত্রাসীদের গ্রেপ্তারে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারছে না পুলিশ। প্রশাসনের খাতা কলমে খুনের রেকর্ড থাকলেও এর বাহিরেও রয়েছে নানা অপরাধ। যার ফলে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে কার্যকরী ভূমিকা রাখতে পারেনি বন্দর থানা পুলিশ। যার আতঙ্ক বন্দর জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে।

স্থানীয়রা জানান, পুলিশের অসাধু কর্মকর্তার সাথে চোরাইল তেল ব্যবসায়ি, চাঁদাবাজ, ভূমিদূস্য, মাদক ব্যবসায়ি ও মাদক ব্যবসায়িদের শেল্টারদাতারা সুসম্পর্ক গড়ে তুলেছে। যার ফলে অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে।  

বন্দরে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার লোকজনের সাথে কথা বললে তারা জানান, বন্দরে প্রধান দুই সমস্যা হচ্ছে মাদক ও কিশোরগ্যাং। এর মধ্যে কিশোরগ্যাংয়ের উৎপাত আতঙ্ক ছড়িয়েছে সর্বত্র। কিশোরগ্যাংয়ের উৎপাতে প্রতিনিয়ত অনাকাঙ্খিত ঘটনায় আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে মানুষ। বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক যোগদান এর পর থেকেই এই পর্যন্ত হামলায় লোমহর্ষক ৯টি হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, গেলো ১৯ অক্টোবর বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের হাজরাদীস্থ বাগপাড়া ব্রীজ সংলগ্ন কচুরিপানা মধ্যে আটকানো অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবকের অর্ধগলিত লাশ উদ্ধার করা হয়। ৭ নভেম্বর বন্দরে মুছাপুর ইউনিয়নের জহরপুর এলাকায় মাদকাসক্ত ছেলে সজিব তার মাকে এলোপাতাড়িভাবে কুপিয়ে হত্যা করে। ৯ নভেম্বর বন্দরে নিখোঁজের ২দিন পর ডোবা থেকে অটোচালক মাসুমের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে ৫ নভেম্বর শনিবার অটোচালক মাসুম হাওলাদার নিখোঁজ হয়েছিল। ২৪ নভেম্বর বৃস্পতিবার সন্ধ্যায় বন্দর সোনাকান্দা এনায়েতনগর এলাকা থেকে সোহাগ নামে আরও এক অটোচালকের লাশ উদ্ধার করা হয়। এমনকি ২০ জানুয়ারি মদনপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকার একটি ডোবা থেকে ওহাব নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়। তার মাথায় আগাতের চিহৃ রয়েছে বরে জানান গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা।  গত মাসের ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় বন্দর রূপালী এলাকায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মেরাজুল ইসলাম নামে এক ওয়াকশপ ব্যবসায়ী কুপিয়ে হত্যা করা হয়। একই সঙ্গে তার বন্ধু আল আমিনকেও কুপিয়ে জখম করা হয়। ২০ এপ্রিল বৃস্পতিবার ভোরে বন্দর উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের চানপুর এলাকার বায়তুল আমান জামে মসজিদে এতেকাফে বসা মাঈন উদ্দিন নামে এক যুবককে ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয়।  ২৭ মে শুক্রবার রাত ৯ টা দিকে উপজেলার কলাগাছিয়া ইউনিয়নের ঘারমোড়া বাজারে তেল ব্যবসায় নিয়ে ক্যাপ রোমানকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ১৯ জুন  আবু বকর নামে এক ওযাকশপ শ্রমিকের লাশ ডোবা থেকে উদ্ধার করা হয়। এর আগে ১৭ জুন তিনি নিখোঁজ ছিলেন। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী কে বা কারা হত্যা করে বাড়ির পাশে পুকুরে লাশ ফেলে রেখে গেছে বলে ধারণা করেন।  সর্বশেষ গত ৬ জুলাই বন্দরে নবীগঞ্জ এলাকায় বিচার সালিশি বৈঠকে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে রাজিব নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়।  

সন্ত্রাস দমনে পুলিশের ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও বন্দরে সর্বত্র অপরাধ কমছে না। পুলিশ প্রশাসন কখনো রাজনৈতিক অপরাধীদের ধমন করছে, কখনো ধমনে ব্যর্থ হচ্ছে। যার কারণে অপরাধ কমছে না।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭