বিবাহিত,অছাত্রদের দিয়ে পল্লবী থানা ছাত্রলীগের কমিটি,নানা বিতর্ক ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

বিবাহিত,অছাত্রদের দিয়ে পল্লবী থানা ছাত্রলীগের কমিটি,নানা বিতর্ক ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

আজকের সংবাদ ডেক্সঃ কথিত আছে জাকির হোসেন নামে স্থানীয় এক আ. লীগের নেতার কাছে অর্থের বিনিময়ে পাওয়া যায় পল্লবী থানা ছাত্রলীগের পদবী। যে জাকির হোসেন নিজেকে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচির আস্থাভাজন বলে দাবীও করেন তিনি। বিগত তিন বারের কমিটি গঠন করে জাকির হোসেন ঢাকা শহরে বেশ কয়েকটি বহুতল ভবনের মালিক হয়েছেন। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী বিবাহিতদের ছাত্রলীগ করার সুযোগ নেই। কিন্তু এসব গঠনতন্ত্রের তোয়াক্কা না করে বিবাহিত ও অছাত্রদের দিয়েই ছাত্রলীগের সভাপতি বানিয়েছেন জাকির হোসেন নামের এই ব্যক্তি।

পল্লবী থানা ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সভাপতি জহিরুল আলম জুম্মান ও সাধারণ সম্পাদক আপন হোসেন সেলিম উভয়েই বিবাহিত ও সন্তানের জনক। স্ত্রী সন্তানসহ তারা নিজেরাই ফেসবুকে ছবি পোস্ট করেন। এর আগের কমিটির সভাপতি আব্দুল ওহাব অপু ২ সন্তানের জনক হয়েও ছাত্রলীগের পদ পেয়েছিলেন এই জাকির হোসেনের হাত ধরেই। ৭ বছর ধরে চলমান মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটি নতুন করে গঠন করার জন্য ঢাকা মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক আগ্রহ প্রকাশ করলে জাকির হোসেন বাধা প্রদান করেন। বহিরাগত আল ইত্তেহাদ রোহানকে অর্থের বিনিময়ে ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক করতে সুপারিশ করেছিলেন জাকির হোসেন, পরবর্তীতে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি করলে মহানগর নেতাদের চাপে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আল ইত্তেহাদ রোহানকে বহিষ্কার করে পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। সেই বহিষ্কার হওয়া ব্যক্তিকে আবার পূনরায় পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি বানাতে জাকির হোসেন তার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছেন। জাকির হোসেনের সাথে ফেসবুকে বিভিন্ন সময়ের রাজনৈতিক ও ব্যক্তিগত ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে আছে। অন্যদিকে মহানগর উত্তর ছাত্রলীগের অব্যহতি প্রাপ্ত সভাপতি ইব্রাহীম হোসেনের পছন্দের তালিকায় পল্লবী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি হিসেবে আছে জুনায়েদ হোসেন নাহিদ নামের আরেক যুবলীগ কর্মীর নাম। মাদকসহ বেশ কয়েকটি ফৌজদারী মামলার আসামি এই নাহিদ। মামলা নং জিআর পল্লবী ৩০ (৯)১৯ সহ অন্যান্য মামলা গুলো আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। বেশকয়েকবার গাড়িতে মাদকসহ আটক হয়ে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ছাড়া পেয়েছেন বলে জানা যায়। তার বিবাহের কাবিননামাসহ এক নেতার কাছে অভিযোগ করলেও কোন ব্যবস্থা নেননি ঐ নেতা। ঐ নেতার নাম ইব্রাহিম বলে জানা গেছে। ইব্রাহিমকে গত দুই মাস আগে প্রধানমন্ত্রীর স্বাক্ষর জাল করে জালিয়াতি এবং নিজের বাবার নাম পরিবর্তণ করে পাসপোর্ট তৈরি করার দায়ে ছাত্রলীগ ঢাকা মহানগর উত্তরের কমিটি থেকে অব্যাহত দেয়া হয়েছে। ইব্রাহিম হোসেনের কন্সট্রাকশন সাইটে ইট,বালু, সিমেন্ট সাপ্লাইয়ের দায়িত্ব এই নাহিদের নিজের এলাকায় রয়েছে ইট, বালু, সিমেন্টের ব্যবসা। এলাকায় কেউ বাড়ি ঘর নির্মান করলেই জোর করে সেখানে মালামাল সাপ্লাই করেন নাহিদ, তাকে রাজনৈতিক ভাবে পৃষ্ঠপোষন করেন ইব্রাহীম হোসেন। বর্তমানে ইব্রাহীম হোসেনের অব্যাহতির ঘটনায় কিছুটা আশাহত হলেও তিনি মনে করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজিব আহমেদ অবশ্যই ইব্রাহীম হোসেনের কথামতই চলবেন, আর ইব্রাহীম হোসেন অব্যহতি পেলেও পর্দার আড়ালে থেকে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করবে ইব্রাহীম। জানা যায় ইব্রাহীম হোসেনের কন্সট্রাকশন ব্যবসায় কয়েক লক্ষ টাকার মালামাল দিয়েছেন নাহিদ। পল্লবী থানা ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মীর সাথে কথা বলে বিষয়গুলোর সত্যতা পাওয়া গেলেও জাকির হোসেনের ভয়ে অনেকেই মুখ খুলতে নারাজ। প্রায় ২ যুগ ধরে কমিটি বানিজ্যের মাধ্যমে জাকির হোসেন এক ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যার সামনে যোগ্য ও সাংগঠনিক ছেলেরা খুব অসহায় হয়ে পরেছে ভাবে মনের গভীরে কষ্ট নিয়ে দিন পার করছে। ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সজিব আহমেদ ইব্রাহীম হোসেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও একই জেলার পিরোজপুর মঠবাড়িয়া থানায় বাসিন্দা সম্পর্কে তারা আত্মীয় যার কারণে ইব্রাহিম সভাপতি হওয়ার পরে সজিবকে সিনিয়র সহ-সভাপতি বানিয়েছেন বলে জানা যায়, ইব্রাহীম হোসেনের সাথে কমিটি বানিজ্যের ভাগবটোয়ারা তিনি আগে থেকেই পেতেন, এখন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হওয়ার পর সেই ভাগবটোয়ারা আরো সহজ হয়েছে বলে রাজনৈতিক সমালোচকরা মনে করছেন। এ ব্যাপারে সজিব, নাহিদ, রোহান ও ইব্রাহিমের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তারা ফোন রিসিভ করেন নি। পল্লবী থানার অন্তর্গত প্রতিটি ওয়ার্ডেও এরকম বিবাহিত ও অছাত্র আর বিতর্কিত বহু মামলার আসামিদের নিয়ে গঠন করেছে কমিটি। ওয়ার্ড এর বিতর্কিত নেতাদের নিয়ে ধারাবাহিকের দ্বিতীয় পর্বে আসছে বিস্তারিত...