সাবেক সদস্য আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগ।
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁয়ে মেঘনা নদীতে ইজারা ছাড়াই প্রকাশ্যে দিনে ও রাতে চুরি করে প্রায় ৫/৬টি শক্তিশালী ড্রেজার বসিয়ে মেঘনা নদীর আনন্দ বাজার ফ্রেস কোম্পানির মাথায় থেকে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
সূত্র জানায়,স্থানীয় বৈদ্যের বাজার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক সদস্য আবুল হোসেন ও তার সাঙ্গপাঙ্গরা দীর্ঘ তিন বছর ধরে বালু উত্তোলন করে নিয়ে যাচ্ছে,রাস্তায় বিশ হাজার ফুট পাইপ বসিয়ে প্রতিদিন তিন থেকে চার লক্ষ ফুট বালু উত্তোলন করে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
গত কয়েকদিন আগেও ভ্রামমান আদালতের কারাভোগ ও মুচলেকায় ছাড়া পেয়ে আবারো বালু উত্তোলন সাথে জরিয়ে পরছে এই আবুল হোসেন।
মেঘনা নদীর অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে মেঘনা নদী বেষ্টিত অনেক গ্রাম এখন চরম হুমকির মুখে রয়েছে। কৃষি জমি ও ঘরবাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী।বর্তমানে মালিগাঁও, হাড়িয়া, গোবিন্দ হাড়িয়া বৈদ্যেপাড়া সোনামুইসহ কয়েকটি গ্রাম হুমকির মুখে পড়েছে। এছাড়াও মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত আমান ইকোনমিক জোন হুমকির মুখে রয়েছে।
উপজেলার বৈদ্যোর বাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজার এলাকার দীর্ঘ দিন ধরে বালু উত্তোলন করছেন স্থানীয় বালু সন্ত্রাসী আবুল হোসেন । শতবছরের ঐতিহ্যবাহি আনন্দবাজার হাট ধ্বংসের পথে। আনন্দবাজারের তীর ঘেষে বালি উত্তোলনের ফলে এ বাজারের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পরছে। স্থানীয় বালু সন্ত্রাসীরা হলো, বৈদ্যোর বাজার ইউনিয়নের সাবেক মেম্বার আবুল হোসেনসহ তার নেতৃবৃন্দ, আনন্দবাজার এলাকার মুক্তিযোদ্ধা গফুর হত্যার অন্যতম ২ নং আসামী এ আবুল হোসেন। বর্তমানে মামলাটি আদালতে চলমান আছে, যাহার নং ২১/১/২০০৪ইং। প্রকাশ্যে আবুল হোসেন মাদকের শেল্টার দেন পঞ্চবটি এলাকার দুর্ধর্ষ মাদক বিক্রেতা শাহালম,রব ও নজরুল গংকে।
প্রতিদিন রাতে ও দিনে মেঘনা নদীর আনন্দ বাজার ফ্রেস কোম্পানির এলাকায় চুরি করে বালু কেটে নিয়ে যাচ্ছে বালু উত্তোলনকারীরা।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের ফলে বাড়িঘর নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রঘুনারচর, গুচ্ছগ্রাম, সবুজবাগ ও আশপাশ এলাকার শতাধিক পরিবার এলাকার ৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান হুমকির মুখে রয়েছে। বালু উত্তোলন বন্ধ করা না গেলে কোনোভাবেই ভাঙন রোধ করা যাবে না।
সরেজমিনে মেঘনা নদীতে গতকাল রোববার দুপুর গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীর সোনামুই, আনন্দবাজার এলাকা ও আমান ইকোনমিক জোনের পাশে ৮-১০টি শক্তিশালী ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন চলছে। বালু উত্তোলনের কাছে প্রায় ১০-১২টি বাল্কহেড বালু নেওয়ার জন্য ভীড় জমিয়েছে। এলাকায় একটি ট্রলার যোগে লাঠিসোটা নিয়ে পাহাড়া দিচ্ছে বালু উত্তোলনকারীদের সন্ত্রাসী বাহিনী।
উল্লেখ্য সরকারি নিয়মনীতি উপেক্ষা করে উপজেলার বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের আনন্দবাজারের হরিগঞ্জ মোড় থেকে পঞ্চবটি ব্রীজ মোড় পর্যন্ত রাস্তা ও খালের ধারের সরকারি প্রায় অর্ধশত কদম গাছ কাটার ও অভিযোগ রয়েছে এই সাবেক মেম্বার আবুল হোসেনের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে এলাকাবাসী প্রশাসনের জোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে আবুল হোসেন জানান আমি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করি না, অন্য জায়গা হইতে কিনে নে তারপর আমি বালু বিক্রি করি, একটি স্বার্থনেশি মহল আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।
এ বিষয়ে সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার সরকার জানান, বালু উত্তোলনের বিষয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে পূর্বেও ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও নেওয়া হবে। অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকারীদের কোন অবস্থাতেই ছাড় দেয়া হবেনা।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন