আড়াইহাজার (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:-নতুন করে ডাকাত আতঙ্কে ভুগছেন নারায়ণগঞ্জ আড়াইহাজার উপজেলা বাসি।
রোববার দিবাগত রাতে চারটি বাড়ীতে ডাকাতিসহ গত এক সাপ্তাহের মধ্যে উপজেলা জুড়ে ১০টি ডাকাতির ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে।
সংঘবদ্ধ ডাকাতরা দরজা ভেঙ্গে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার লুট করে নেয়। কেউ বাঁধা দিলেই দুর্বত্তরা মারধর ও অস্ত্র দিয়ে আঘাত করছে। রোববার রাতে সংঘটিত ডাকাতির ঘটনায় বৃষ্টি আক্তার (২৬) নামের এক গৃহবধূর কান ধারালা অস্ত্র দিয়ে কেটে দিয়েছে ডাকাতদল।
সর্বশেষ রোববার রাত আড়াইটার দিকে ২০-২৫ জন মুখোশধারী ডাকাত হানা দেয় মাহমুদপুর ইউনিয়নের আগুয়াদী এলাকায়। ওই এলাকার মোটুর ছেলে জুমন, রুস্তম আলীর ছেলে মামুন, অপর ব্যাক্তি বাবু এবং আ. মজিদের ছেলে মান্নানের ঘরে এক যোগে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ২০/২৫ জনের মুখোশ পরিহিত অস্ত্রধারী ডাকাত দল ওই বাড়ীর প্রতিটি ঘরের দরজা ভেঙ্গে ভিতরে প্রবেশ করে ঘরে থাকা লোকজনদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি ও মারপিট করে এবং মান্নানের ছেলে মফিজুলের স্ত্রী বৃষ্টি আক্তার (২৬) এর কান ধারালা অস্ত্র দিয়ে কেটে গুরুতর আহত করে, এসময় নগদ ২ লাখ টাকা, আড়াই ভরি ওজনের স্বর্ণলংকার এবং ৬টি মোবাইল ফোন লুটে নিয়ে চলে যায়। এর আগে শনিবার রাতে উচিৎপুরা ইউনিয়নের টগুরিয়াপাড়া এলাকায় আল আমিনের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে । ডাকাত দল ঘরের দরজা ভেঙ্গে ঘরে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে। পরে তাদের হাত-পা বাঁধে ঘর তছনছ শুরু করে। এক পর্যায়ে নগদ এক লাখ টাকা, সাড়ে চার ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, চারটি মোবাইল ফোনসহ অন্যান্য মালপত্র লুটে নেয়। ডাকাতি শেষে চলে যাওয়ার সময় এলাকাবাসী আরমান মিয়া (২৬) নামর এক ডাকাতকে অটা-রিকশাসহ আটক করে পিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপার্দ করে জনতা।
এর আগে বৃহস্পতিবার রাত ৩ টার দিকে ডাকাতি হয় উপজেলার বিশনদী ইউনিয়নের দয়াকাদা গ্রামের কাদাপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল হাকিম মিয়ার বাড়িতে। একই কায়দায় ১৫-২০ জনের মুখোশধারী ডাকাত দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকে। হাকিম মিয়া বলেন, অস্ত্রের মুখে তাঁর পরিবারের সবাইকে জিম্মি করে ডাকাতরা লুটপাট চালায়। সব মিলিয়ে তাঁর বাড়ি থেকে নগদ ২৪ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার, দুটি মোবাইল ফোনসহ মূল্যবান জিনিসপত্র লুট হয়।
গত ২৭শে এপ্রিল রাত আড়াইটার দিকে ডাকাতি হয়েছে ব্রাহ্মদী ইউনিয়নের বড় বিনাইরচর এলাকার বীর মুক্তিযাদ্ধা বি এম কামরুজ্জামানের বাড়িতে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ১৮-২০ জন মুখোশধারী ডাকাত তাঁর বাড়ির পাঁচটি ঘরের দরজা ভেঙে ভিতর ঢুকে। পরে তারা দুই ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার, নগদ ২০ হাজার টাকা, আই-ফোনসহ পাঁচটি অ্যান্ড্রয়েড মোবাইল ফোন লুটে নেয়। ডাকাতদল ধারালো অস্ত্রের আঘাতে একই বাড়ির কিশোর নুরুল ইসলাম (১৭) গুরুতর আহত হয়।
ওই ডাকাত দলের সদস্যরা বি এম কামরুজ্জামানের পরিত্যক্ত কারখানায়ও হামলা চালায়। বি এম কামরুজ্জামানের ভাই রফিকুল ইসলামের ধারণা, ডাকাতদলের সদস্যরা হলো বেশির ১৮ থক ২৬ বছরর মধ্যে। সবাই হাফপ্যাট পরে গামছা দিয় মুখ ঢেকে এসেছিল।
হঠাৎ করে এলাকায় চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পাওয়ায় জনমন আতংকের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ব্যাপার আড়াইহাজার থানার ওসি খন্দকার নাসিরউদ্দিন জানান, প্রতিটি ঘটনা পুলিশ তদন্ত করে দেখছে। ইতিমধ্যে আরমান নামের এক ডাকাতকে পাকড়াও করে জনতা গনপিটুনী দিয়ে পুলিশে সোপার্দ করেছে এবং একটি মামলাও হয়েছে। বাকী ঘটনা গুলোর বিষয় কোন লিখিত অভিযাগ পাওয়া যায়নি বলে তিনি জানান।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন