নারায়নগঞ্জ প্রতিনিধিঃ- ‘বিগত সময়ে এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বপালনকালে তাকে বিতারিত করতে যেমন আদাজল খেয়ে মাঠে ছিলো প্রভাবশালী চক্র ঠিক তেমনি এবার এই ডিসি (জেলা প্রশাসক) মোহাম্মদ মাহমুদুল হক কে নাারয়ণগঞ্জ থেকে তাড়াতে যার-পর-নাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওই পুরাতন চক্র। কোন অবস্থাতেই যেন প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ না পায় সে লক্ষ্যেও প্রাণপণ অপচেষ্টা চালাচ্ছে চক্রটি । আর এই প্রভাবশালী অপরাধী চক্রের কাছে যে সকলেই জিম্মি তা কে না জানে । ওই চক্র ক্লাবে বসেই চলছে চক্রান্ত।’
তোলপাড়ের যেন শেষ নাই সেই ঘুষের ৪২ লাখ টাকা উদ্ধার ও পরবর্তীতে জেলা প্রশাসক কার্যােলয়ের সার্ভেয়ার কাওসারকে গ্রেফতারের মধ্য দিয়ে। নগনীজুড়ে এক প্রভাবশালী এমপির শ্যালক কে ঘিরে এই ঘুষের কেলেংকবারীর হোতা হিসেবে মুখে মুখে গুঞ্জন ও ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠলেও নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক সকলকে অন্ধকারে রেখে নানা নাটকীয়তার জন্ম দিয়ে যাচ্ছেন ।
এদিকে প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় সর্বত্র চাঞ্চল্যের ঝড় বইলেও আসল রহস্য এখনো রয়েছে সকলের অজানা। সার্ভেয়ার কাওসার গ্রেফতার, ঘুষ কেলেংকারীর মূল হোতা নরায়ণগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজু কে বহিস্কারের পর এবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার খাদিজা বেগমকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। সিনিয়র সহকারী কমিশনার খাদিজা বেগমের বিরুদ্ধে অনেকের অভিযোগ রয়েছে।
এই শাখায় দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে অপর সহকারী কমিশনার আর্নিকা আক্তারকে।
জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরত সার্ভেয়ারের গ্রেপ্তারের পর ভূমি অধিগ্রহণ শাখা থেকে সরিয়ে নেওয়া হয় খাদিজা বেগমকে। তিনি বর্তমানে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের মিডিয়া ও রিসার্চ, উন্নয়ন, মূল্যায়ন ও পরিবীক্ষণ শাখায় রয়েছেন।
এদিকে, টাকা উদ্ধারের ঘটনার পর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) এইচ এম সালাউদ্দীন মনজুকেও বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে দুদক মামলায় গ্রেপ্তার করা হয় সার্ভেয়ার কাওসার আহমেদকে। মামলার অপর আসামি সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছেন।
দুদক সূত্রে জানা যায়, গত ১০ জানুয়ারি রাত দশটার দিকে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে সিদ্ধিরগঞ্জ রাজস্ব সার্কেলের প্রাক্তন আউটসোর্সিং কর্মচারী জাহিদুল ইসলাম সুমন (২৮) একটি কার্টুনসহ নিরাপত্তা কর্মীদের হাতে আটক হন। জেলা প্রশাসকের নির্দেশে ওই কার্টন খুলে টাকা গুনে ৪২ লাখ টাকা পাওয়া যায়। পরে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করে টাকাগুলো জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কোষাগারে জমা রাখা হয়।
জব্দ করা ৪২ লাখ টাকার সাথে দুর্নীতির সম্পৃক্ততা আছে ধারণা করে গত ১৪ জানুয়ারি জেলা প্রশাসক মাহমুদুল হক দুর্নীতি দমন কমিশনে চিঠি দেন। পরে ১৬ জানুয়ারি দুদক তাদের জেলা কার্যালয়ে মানি লন্ডারিং, দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় একটি মামলা করে। ওই মামলায় জাহিদুল ইসলাম সুমন ও কাওসার আহমেদকে আসামি করা হয়। কাওসারকে গ্রেপ্তার ও জাহিদুল ইসলাম সুমন পলাতক রয়েছে বলে জানায় দুদক।
ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় কর্মরতদের এবং দালালদের বিরুদ্ধে আগেও নানা অভিযোগ উঠেছিল। সার্ভেয়ার গ্রেফতারের মধ্যে দিয়ে বিভিন্ন সময় উঠা দুর্নীতির অভিযোগের কিছু সত্যতা পাওয়া গেছে বলে মনে করছেন ভুক্তভোগীরা। তারা বলছেন দুর্নীতি সংশ্লিষ্ট ৪২ লাখ টাকা উদ্ধারের ঘটনায় নাম আসা রানা কি তবে ভূমি অধিগ্রহণ শাখার কোন দালাল চক্রের সদস্য। অধিকতর তদন্তে রানার আসল পরিচয় উদঘাটন এবং তাঁকে গ্রেফতারের দাবি তুলছেন ভুক্তভোগীরা। এছাড়া দালাল চক্রের সদস্য হিসেবে মিল্টন, ইকবাল, বুলবুল নামের কয়েকজনের নাম শোনা যাচ্ছে ।
নারাযণগঞ্জের একটি ক্লাবের একাধিক অত্যান্ত নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘ঘুষের ওই ৪২ লাখ টাকা প্রভাবশালী এমপির শ্যালকের তা সকলেই জানেন কিন্তু কথা বলার সাহস নাই কারোর। কথা কইতে গেলেই গুলি খাইতে হইবো । তাই মুখ বন্ধ সকলের। আর ওই প্রভাবশালী এমপির প্রভাবশালী শ্যালকের ভয়ে বাঘে-মহিষে এক ঘাটে জল খায়। এতেটাই দূর্ধর্ষ ওই শ্যালকের ঘনিষ্ঠ ব্যক্তি হচ্ছে ওই ড্রাইভার পুত্র রানা। এই ক্লাবে বসেই নানা অপকর্ম করে যাচ্ছে ওই প্রভাবশালীরা । রানাকেও কিছু জিজ্ঞেস করবে কেউ (আসলে ঘটনা কি ?) এই সাহসও রাখে না কোন ক্লাব সদস্য । বিগত সময়ে এসপি হারুন নারায়ণগঞ্জে দায়িত্বপালনকালে তাকে বিতারিত করতে যেমন আদাজল খেয়ে মাঠে ছিলো প্রভাবশালী চক্র ঠিক তেমনি এবার এই ডিসি (জেলা প্রশাসক) মোহাম্মদ মাহমুদুল হক কে নাারয়ণগঞ্জ থেকে তাড়াতে যার-পর-নাই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ওই পুরাতন চক্র। কোন অবস্থাতেই যেন প্রকৃত ঘটনা প্রকাশ না পায় সে লক্ষ্যেও প্রাণপণ অপচেষ্টা চালাচ্ছে চক্রটি । আর এই প্রভাবশালী অপরাধী চক্রের কাছে যে সকলেই জিম্মি তা কে না জানে । ওই চক্র ক্লাবে বসেই চলছে চক্রান্ত।’
ক্লাব সদস্যদের এমন ক্ষুদ্ধ অসংখ্য মন্তব্য সংরক্ষনে রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন