সোনারগাঁ সংবাদদাতাঃ-দূর্নীতি,অনিয়ম ও ঘুষ দাবির অভিযোগ ওঠায় নারায়ণগঞ্জ সোনারগাঁয়ের হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সেই কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহকে বদলি করা হয়েছে।
গতকাল সোমবার রাতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হকের স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইব্রাহিম খলিল উল্লাহকে জামপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা হিসেবে বদলি করা হয়েছে।তার স্থলে জামপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান মুন্সি।
উল্লেখ্য এর আগে জামপুর ইউনিয়ন ভূমি অফিসে কর্মরত থাকা অবস্থায় ঘুষের অভিযোগে এলাকাবাসী তার বিরুদ্ধে ঝাড়ু ও জুতা নিয়ে মানববন্ধন করেন। পরে তাকে ওএসডি করা হয়েছিল। তার জামপুর ইউনিয়ন অফিস বদলির আদেশে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান।
এর আগে গত ১০ অক্টোবর আজকের সংবাদ ডটকমে বিএনপি নেতার ভাই বলে কথা! এসিল্যান্ডকে তোয়াক্কা না করে ঘুষ বাণিজ্যে ব্যস্ত নায়েব ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ ও অনিয়ম ও ঘুষের অভিযোগে জেলা প্রশাসনের তদন্ত শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। ওই দিনই দিনভর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের জুডিশিয়াল মুন্সিখানা শাখার সিনিয়র সহকারী কমিশনার আরাফাত মোহাম্মদ নোমান এ তদন্ত করেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন সোনারগাঁ সহকারী কমিশার (ভূমি) মোঃ ইব্রাহীম।
এর আগে গত ২৫শে সেপ্টেম্বর ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কাছে মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র ম্যানেজার (ল্যান্ড) আবু মূছা চৌধুরী একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তিনি অভিযোগে উল্লেখ করেন, হোসেনপুর ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ গত ৮ এপ্রিল যোগদান করার পর থেকে তাদের জমি ক্রয়-বিক্রয়, নিয়মিত খাজনা পরিশোধ ও নামজারি করতে অসহযোগিতা করেন। তাদের কোম্পানির ৪০২টি ৩০০ একর ভূমি রয়েছে। এসব জমির হোল্ডিং নিবন্ধন না করায় তারা বকেয়া খাজনা পরিশোধ করতে পারছেন না। এ বিষয়ে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অনলাইনে অ্যান্ট্রি করার নামে ২৫ লাখ টাকা অতিরিক্ত দাবি করেন। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের অনুমতির পর নামজারি প্রস্তাব (১২টি নামজারি) ঝুলিয়ে রাখেন। এসব নামজারি প্রস্তাবে ইব্রাহিম খলিল উল্লাহ ৫০ শতাংশ টাকা বাড়ানোর দাবি করেছেন। টাকা না দিলে নথি বাতিলের হুমকি দেন।
এছাড়াও তার বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর কাছ থেকে ঘুষ বাণিজ্যের ব্যাপক অভিযোগ রয়েছে। অপরদিকে রয়েছে তার ও তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের অর্থ যোগনদাতার অভিযোগ। জানা যায় তার আপন ভাই হাসনাঈম কে দিয়ে প্রকাশ্যে হোসেনপুর তহসিল অফিসে ঘুষ বাণিজ্যের অর্থ লেনদেন করতেন। উল্লেখ্য কিছুদিন আগে বিএনপির জ্বালা পোড়াও মামলায় গ্রেফতার হয় তার আপন ছোট ভাই হাসনাঈম।অপরদিকে রয়েছে তার আরেক ভাই রফিকের বিরুদ্ধে জ্বালাপোড়া সহ একাধিক মামলা।সে বর্তমানে পলাতক রয়েছে।
এ বিষয়ে এলাকাবাসী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন।
উক্ত সংবাদ প্রকাশের এক মাস পর তাকে বদলি করা হয়। আদেশে জেলা প্রশাসক উভয় কর্মকর্তাকে ১৬ নভেম্বর নিজ নিজ কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হয়ে নতুন কর্মস্থলে যোগদানের আদেশ দেন। আদেশের অনুলিপি ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ ১০ জনকে দেওয়া হয়।
এবিষয়ে সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ ইব্রাহীম বলেন, ভূমি কর্মকর্তা ইব্রাহিম খলিল উল্লাহর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে তদন্ত হয়েছিল। অভিযোগের সঙ্গে তাঁর বদলির সংশ্লিষ্টতা নেই বলে উল্লেখ করে তিনি। জনস্বার্থে এ বদলি করা হয়েছে বলে জানান তিনি ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন