বন্দরে অজ্ঞাত আসামির আড়ালে পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য ॥ জানেনা বাদীরা - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট, ২০২৩

বন্দরে অজ্ঞাত আসামির আড়ালে পুলিশের গ্রেফতার বাণিজ্য ॥ জানেনা বাদীরা


বন্দর প্রতিনিধি:
বন্দর থানা ও বন্দর পুলিশ ফাঁড়িতে চলছে পুলিশের রমরমা গ্রেফতার বাণিজ্য। এ বাণিজ্যর অন্তরালে রয়েছে বিভিন্ন মামলায় অজ্ঞতনামা আসামি। আর এ বাণিজ্যের অভিযোগ খোদ ওসি ও বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির আইসির বিরুদ্ধে। সাবদীতে ডাকাতি মামলায় অজ্ঞাত আসামি করা হলেও গ্রেফতার করা হচ্ছে নিরীহ মানুষ। 

অভিযোগ রয়েছে, ডাকাতি মামলায় আসামিদের গ্রেফতার করা হলেও কিছুই জানেন না মামলার বাদীরা। এনিয়ে পুরো বন্দরে সমালোচনার ঝঁড় বইছে।  

বন্দর থানায় ২০২৩ সালের ১৯ ও ২১ জুন রাতে সাবদীতে সেলসারদী এলাকায় ডাকাতির ঘটনায় কালাচাঁন বাদী হয়ে ১৫/১৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে বন্দর থানায় মামলা দায়ের করা হয়। যার মামলা নং-২২(০৬)২৩। এ সুযোগে গ্রেফতার করা হচ্ছে সাধারণ মানুষ। পুলিশের সঙ্গে আটকদের অর্থ বাণিজ্যে দফারফা হলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। অন্যথায় ডাকাতি মামলায় চালান দেওয়া হয় হাজতে।

এ দিকে ডাকাতি মামলায় কলাগাছিয়া ইউনিয়ন হাজরাদী এলাকার আনোয়ার মিয়ার ছেলে মাহাবুব ও দীঘলদী এলাকার এনামূল মিয়ার ছেলে ফরহাদকে আটক করে ডিবি পুলিশ। পরে বন্দর পুলিশ ফাঁড়িতে তাদের হস্তান্তর করলে তাদের চালান দেয়া হয়। তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে রয়েছে ছিনতাইয়ের অভিযোগ অথচ তাদের বিরুদ্ধে মামলা না থাকলেও ডাকাতি মামলায় চালান দেয়া হয় হাজতে। এরপরে বন্দর রূপালী আবাসিক এলাকা থেকে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি নিরব নামে এক যুবককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত নিরব রূপালী এলাকার আকরাম হোওসেন মিয়ার ছেলে। পুলিশের চাহিদা মত অর্থ না দেয়ায় (৩ আগস্ট) তাকেও ডাকাতি মামলায় চালান দেয়া হয় হাজতে। এর পর ৯ আগস্ট বন্দর থানাধীন মুরাদপুর এলাকা থেকে আবুল বাসার ওরফে বাদশা নামে আরও এক যুবককে গ্রেফতার করে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি। গ্রেফতারকৃত যুবক নাসিক ২৭নং ওয়ার্ডের মুরাদপুর এলাকার কাইয়ূম মিয়ার ছেলে। ১০ আগস্ট ডাকাতি মামলায় তাকেও চালান দেয়া হয় হাজতে। সর্বশেষ ২১ আগস্ট দুপুরে বন্দর রূপালী এলাকা থেকে  শুভ, পিয়েল, পায়েল, শাওন ও রাজীব নামে ৫ যুবককে আটক করে বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সেপেক্টর ইনচার্জ রেজাউল করিম। এর মধ্যে রাজীব নামে এক যুবককে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বাকী চারজনকে রিমান্ড চেয়ে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে প্রেরণ করা হয়।  

আটককৃত যুবকদের বিরুদ্ধে ডাকাতি মামলা না থাকলেও তাদের চালান দেয়া হয়। এর মধ্যে শুভ নিহত মেরাজুল ইসলাম এর পরিবারকে সার্বিক দেখাশুনা সহ সহযোগীতা করে আসছে বলে জানান তার পরিবার।  

জনৈক রানা জানান, ডাকাতির মামলায় প্রকৃত অপরাধীদের গ্রেফতার না করে পুলিশ নিরীহ লোকদের আটক করে অর্থ আদায় করছে। যাকে তাকে ধরে ডাকাতি মামলায় চালান দিয়ে দিচ্ছে অথচ এই মামলার বাদী কিছুই জানেন না। পুলিশ এখন ফ্রি স্টাইলে আটক বাণিজ্য চলছে।

এামলার আসামিদের গ্রেফতারের বিষয় বাদীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না, আমার সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করে নাই। মামলা করার পর থেকে এই পর্যন্ত ৮ জন আসামিকে আদালতে চালান দেয়া হয়েছে এ প্রশ্নে বাদী জানান আমরা কিছুই বলতে পারবো না। 

এ বিষয় মামলার আইয়ূ বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির ইন্সেপেক্টর ইনচার্জ রেজাউল করিম জানান, সাবদীতে দু’টি ডাকাতি মামলার ঘটনায় তাদেরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তারা সবাই জড়িত রয়েছে। ৫ জনকে গ্রেফতার করা হলেও ৪জনকে আদালতে চালান দেয়ার বিষয় প্রশ্ন করা হলে তিনি সংযোগ কেটে দেয়।  

ডাকাতি মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামিদের বিষয়ে বাদী কিছুই জানে না জানতে চাইলে বন্দর থানার অফিসার ইনচার্জ আবু বকর সিদ্দিক জানান, ঠিক আছে বাদীকে অবগত করবো।  

জানতে চেয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল পিপিএম(বার) এর ব্যবহৃত মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেনি। যার জন্য বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।  

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের (১৮ জুন) সোমবার রাত ১০টায় প্রতিদিনের মত রাতে খাবার খেয়ে কাঁচামাল ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন বিশ^াস ও তার পরিবার যার যার রুমে ঘুমাতে যায়। সে সাথে পূর্ব পাশের দািক্ষন কনারে কাঁচামাল ব্যবসায়ী ছেলে লিখন বিশ^াসও ঘুমিয়ে পরে। মঙ্গলবার (১৯ জুন) রাত ২টা ৩০ মিনিট থেকে ২টা ৪০ মিনিটের মধ্যে কলাগাছিয়া ইউনিয়নের সাবদীস্থ দিঘলদী এলাকায় কাঁচামাল ব্যবসায়ী বাড়িতে ৮/১০ জনের একটি মুখোশধারী ডাকাত দল উল্লেখিত ব্যবসায়ী পূর্বমুখী লোহার গেইট খুলিয়া ভিতরে প্রবেশ করে পূর্বমুখি বিল্ডিংএর কেচি গেইটের লক ভাঙ্গিয়া ভিতরে কাঠের দরজা ভাঙ্গিয়া ঘরে প্রবেশ করে। হঠাৎ শব্দ পেয়ে চিত্তরঞ্জন ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলার সাথে সাথে অজ্ঞাত নামা ৮/১০ জন ডাকাত এসে ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন বিশ্বাসকে খাটের উপর ফেলে দেয়। পরে ডাকাত দল ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে গামছা দিয়ে দুই হাত ও প্লাস্টিকের রশি দিয়ে দুই পা বেধে ফেলে। ওই সময় বাড়ি মালিক চিৎকারের চেষ্টা করলে ওই সময় ডাকাত দল দেশী অস্ত্র দিয়ে হত্যার ভয় দেখায়। পরবর্তীতে ডাকাত দল আমার স্ত্রী কাছ থেকে আলমারী চাবি নিয়ে আলামারিতে থাকা জিনিস পত্র তছনছ করে কিছু না পেয়ে ব্যবসায়ী ছেলে রুমে প্রবেশ করে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলাপাথারী ভাবে কুপিয়ে জখম করে। পরে ব্যবসায়ী স্ত্রী হাতে থাকা ১ ভড়ি ওজনের একজোড়া পলা, ৮ আনা ওজনের কানের দুল, ৮ আনা ওজনের গলার লকেট ও ৪ আনা ওজনের ১টি আংটি, নগদ ৫ হাজার টাকা ও ৩টি এনড্রয়েট মোবাইল ফোন যা সর্বমোর্ট ৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকার মালামাল ডাকাতি করে নিয়ে যায়। পরে রমারাত্মক জখম অবস্থায় আমার ছেলেকে উদ্ধার করে নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢামেক হাসপাতালে প্রেরণ করে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭