বিয়ের দাবিতে হত্যার ঘটনায় র্যাবের অভিযানে প্রধান আসামীসহ আটক-২
আজকের সংবাদ ডেস্কঃ-নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়ায় রোকসানা বেগম নামে এক নারী কে পিটিয়ে হত্যা মামলার প্রধান আসামী মনির সহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১১।
শুক্রবার(২২ জুলাই) রাত আনুমানিক ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলোঃ-হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ মনির হোসেন (৪৫) ও মোঃ আমির হোসেন (৪০)।
র্যাব-১১র প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানা যায়, গত ১৮ই জুলাই নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ থানার সাদীপুর ইউনিয়নের দেওয়ান বাড়ীতে বিয়ের দাবিতে অবস্থান নেয়া এক সন্তানের জননী রোকসানা বেগম (৩২) কে পিটিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ভিকটিমের ছোট ভাই মোঃ এনামুল হক বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ঘটনাটি স্থানীয় ও জাতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ আকারে প্রকাশিত হয় যা এলাকায় ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করে।
এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংগ্রহ সহ চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামীদের গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১১র একটি গোয়েন্দা দল ছায়া তদন্ত শুরু করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুলাই শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলার গজারিয়া থানার ভবেরচর এলাকায় অভিযান চালিয়ে চাঞ্চল্যকর ও নৃশংস ‘‘রোকসানা বেগম’’হত্যা মামলার প্রধান আসামী মোঃ মনির হোসেন (৪৫) ও উক্ত হত্যায় জড়িত সন্দিগ্ধ আসামী মোঃ আমির হোসেন (৪০)কে গ্রেফতার করা হয়।
প্রাথমিক অনুসন্ধান ও গ্রেফতারকৃত আসামীকে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়,ভিকটিম রোকসানা বেগম এর স্বামীর সাথে তার বিগত ৭/৮ বছর পূর্বে নিয়ম মোতাবেক বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। তারপর থেকে ভিকটিম তার একমাত্র ছেলেকে নিয়ে ছোট ভাই মোঃ
এনামুল হক (২৫) এর বাড়ীতে বসবাস করে আসছিল। সে জীবিকার জন্য উপজেলার সাদিপুর
ইউনিয়নের বাইশটেকী গ্রামের দেওয়ান বাড়িতে জামদানী শাড়ী তৈরির কাজ করতেন। সেই
সুবাদে উক্ত বাড়ীর মৃত রাজু মিয়ার ছেলে মনির হোসেন(৪৫) এর সঙ্গে ভিকটিম রোকসানা
বেগম (৩২) এর দীর্ঘদিনের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ভিকটিম বিয়ের ব্যাপারে মনির হোসেনকে চাপ দিলে আসামী মনির তার মেয়েকে বিয়ে দেয়ারপর ভিকটিমকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেয়। গত ১৫/০৭/২০২২ তারিখে আসামী মনিরের মেয়ের বিয়ে হলে, ভিকটিম গত ১৮/০৭/২০২২ তারিখে বিয়ের দাবিতে মনিরের বাড়িতে অবস্থান নেয়।
এসময় মনিরের বাড়ির লোকজন তাকে একাধিকবার বাড়ির বাইরে টেনে হিঁচড়ে বের করে দেয়। ভিকটিম তার অবস্থানে অনড় থাকায় মনির হোসেন,তার ভাই গোলজার,খোকন ওরফে খোকা,
ছেলে রানা,মনিরের স্ত্রীসহ অন্যান্য আসামীরা ভিকটিমকে লোহার পাইপ,লাঠিসোঠা দিয়ে
পিটিয়ে মারাক্তকভাবে রক্তাক্ত করে আহত করে। মুমূর্ষ অবস্থায় ভিকটিমকে মনির হোসেন ও তার
সহযোগীরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ভিকটিমকেমৃত ঘোষনা করেন। ভিকটিমের মৃত্যুর সংবাদ জানার পর মনির ও তার সহযোগীরা লাশ রেখেই হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামীরা উক্ত হত্যাকান্ডের কথা স্বীকার করে।
এবিষয়ে হত্যা মামলার অধিকতর তদন্তের জন্য গ্রেফতারকৃত আসামীদ্বয়কে তদন্তকারী কর্মকর্তার নিকট হস্তান্তর কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে ও হত্যাকান্ডে সাথে জড়িত অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন