ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দেওয়ায় সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

মঙ্গলবার, ১০ সেপ্টেম্বর, ২০১৯

ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দেওয়ায় সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা


ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে সরিয়ে দেওয়ায় সভাপতির বিরুদ্ধে মামলা





মোঃইমরান হোসেনঃ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের বারদী ইউনিয়নের নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষককে অযোগ্য ও দায়িত্ব অবহেলার কারনে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে ওই স্কুলের সভাপতির বিরুদ্ধে আদালতে স্কুলের পুরাতন ঘর বিক্রির টাকা আত্মসাতের মামলা দায়ের করেন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক।
এ ঘটনায় এলাকাবাসী বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের অভিভাবক,শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ বিক্ষোভ করেছে।
রবিবার(৮সেপ্টেম্বর)বিকেলে নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার,সহকারী শিক্ষক শিউলি রানী দাস,খলিলুর রহমান,হানজালা শাহ্ চিশতী,খায়রুল আলম খোকন,বারদী ইউনিয়ন পরিষদ ৬নং ওয়ার্ডের সদস্য লোকমান হেকিম, বারদী ইউনিয়ন ৬নং ওয়ার্ডের আওয়ামীলীগের সভাপতি ও দাতা সদস্য ওসমান (মেম্বার),অভিভাবক সদস্য জাকারিয়া ভুইয়া, বিদ্যালয়ের ছাত্র/ছাত্রী ও এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
এসময় এলাকাবাসী বলেন,নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল হাসেম একজন যোগ্য লোক।তার মত একজন দানবির লোকের বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটিতে দরকার আছে।বিদ্যালয়ে যেকোন সমস্যা হলে তাকে পাশে পাই।ছাত্র-ছাত্রীদের পোষাক,যে সকল শিক্ষার্থীরা দুর থেকে আসে তাদের যাতায়াত ভাড়া পর্যন্ত তিনি দিয়ে থাকেন।অযোগ্য একজন শিক্ষককে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে সড়িয়ে দেওয়ায় সভাপতির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা করেছে আমরা এর নিন্দাও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন,নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল হাসেম সাহেবের মতো লোক হয় না। বিদ্যালয়ের স্বার্থে তার মতো একজন বিচক্ষন লোকের দরকার আছে।
সরেজমিনে ওই স্কুলের হিসাব বিভাগে গিয়ে জানা যায়, নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয় সভাপতি আবুল হাসেমের কাছ থেকে বিভিন্ন সময়ে ১৪টি খাতে ১ লাখ ৫৮ হাজার টাকা ঋণ নেয় বিদ্যালয় কমিটি।এ ঋণের টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য একটি রেজুলেশন করা হয়। ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল কমিটির সভায় পুরাতন একটি টিনের তৈরি স্কুল ঘর ২৫ হাজার টাকা বিক্রি করা হয়।সেখান থেকে তার ঋণের ২৫ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়।এছাড়াও খরচের ভাউচারে সভাপতি আবুল হাসেম ও হিসাব সহকারী হানজালা চিশতীর স্বাক্ষর থাকলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের কোন স্বাক্ষর দেখা যায়নি।
নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য জাকারিয়া ভূইয়া জানান,স্কুলের জুনিয়ার শিক্ষক শাহজালাল সিনিয়র এক শিক্ষককে পাশ কাটিয়ে রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব গ্রহন করেন।শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের একটি দল স্কুল পরিদর্শনে এসে সিনিয়র শিক্ষক শামীমাকে দায়িত্ব দেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়ে যান।আমরা ওই নির্দেশ অনুয়ায়ী সিনিয়র শিক্ষক শামীমাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে।
প্রধান শিক্ষকের পদ পূরনের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রদান করি। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার একদিন আগে শাহজালাল এক প্রভাবশালী ব্যক্তির পরামর্শে আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। সভাপতি ঘরের টাকা আত্মসাত করেনি।তাকে আমরা রেজুলেশন করে ঋণের টাকা পরিশোধ করেছি।
নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের হিসাব সহকারী হানজালা চিশতী জানান,ঘর বিক্রির ২৫ হাজার টাকা পেয়ে সকলের মতামতের ভিত্তিতে একটি রেজুলেশনের মাধ্যমে তাকে ঋণের টাকা ফেরত দিয়েছি।তবে আত্মসাতের বিষয়টি মিথ্যা ও বানোয়াট। সভাপতির টাকা স্কুলে ঋণের টাকা দেয়া ছাড়াও তিনি শিক্ষক শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরনা দেয়ার জন্য অনুদানও দিয়ে থাকেন।
নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শামীমা আক্তার বলেন, এ বিদ্যালয়ের আমি সিনিয়র শিক্ষক। জুনিয়র শিক্ষক শাহজালাল রাজনৈতিক ও স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে নিজে প্রধান শিক্ষকের পদ আঁকড়ে রেখেছেন। শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের একটি পরিদর্শক দল এসে আমাকে প্রধান শিক্ষক করার নির্দেশ দেন। পরে আমাকে দায়িত্ব দেয়া হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভাপতির বিরুদ্ধে হয়রানীমূলক মামলা দায়ের করেছে শাহজালাল।
নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি আবুল হাসেম বলেন,আমি ২০১৬ সালের অক্টোবর মাসে সভাপতির দায়িত্ব গ্রহন করি।দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে স্কুলের শিক্ষার্থীদের সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করি। এছাড়াও স্কুলের টাকার প্রয়োজনে আমি স্কুলকে দেড় লক্ষ টাকা ঋণ হিসেবে দেই।এ টাকা ভাউচারের মাধ্যমে বিভিন্ন খরচে ব্যবহার করা হয়েছে।আমি ও হিসাব সহকারি স্বাক্ষর দিলেও ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজালাল স্বাক্ষর না দিয়ে ভাউচার খালি রাখেন। আমাকে ফাঁসানোর জন্যই তিনি ভাউচারে স্বাক্ষর না দিয়ে খালি রেখেছেন।বিদ্যালয়ের জন্য একজন যোগ্য প্রধান শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলে সাবেক ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তার পদ থাকবেনা চিন্তা করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
মামলার এজাহারে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শাহজালাল উল্লেখ করেন, নুনেরটেক উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আবুল হাসেম,যিনি ২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল মাসে কমিটির সভায় পুরাতন একটি টিনের তৈরি স্কুল সর্বোচ্চ দরদাতা হিসেবে সভাপতির মামা ও বিদ্যালয়ের দাতা সদস্য ওসমান গনির নিকট ২৫ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। স্কুল বিক্রি করার টাকা বিদ্যালয়ের নামে খোলা ব্যাংক হিসাব নম্বরে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করেন।
এ ঘটনায় কমিটির সভাপতি আবুল হাসেমের বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুনের আদালতে মামলা দায়ের করেন শাহজালাল। আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে সোনারগাঁ থানার অফিসার ইনচার্জকে বিষয়টি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেন।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭