নবীগঞ্জ গালর্স স্কুলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতি, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

নবীগঞ্জ গালর্স স্কুলের অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতি, বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ


বন্দর (নারায়ণগঞ্জ) প্রতিনিধি:
নবীগঞ্জ গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সায়মা খানমের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগ তুলেছে প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও অভিভাবক। এ বিষয়ে সম্প্রিতি দুর্নীতি দমন কমিশন, শিক্ষাসচিব, ঢাকা শিক্ষা বোর্ড  নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসকের কার্যালয় সহ বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে।

শিক্ষক ও অভিভাবকরা অভিযোগ করেন, পলাতক সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা একেএম সেলিম ওসমান ও শামীম ওসমানের একান্ত আস্থাভাজন হিসেবে নিজের পরিচয় দিতেন অধ্যক্ষ সায়মা খানম। নিয়ম-নীতি তোয়াক্কা না করে দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।


এমনকি সেলিম ওসমান এমপির ক্ষমতার দাপটে বিদ্যালয়ের ফান্ড থেকে দেড় কোটি টাকা আত্মসাত করেছে।  


নিজের পছন্দের শিক্ষকদের নিয়ে তিনি গড়ে তুলেছিলেন একটি সিন্ডিকেট। এরই প্রভাবে তিনি শিক্ষকদের ওপর দমন-পীড়ন চালাতেন। ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর এই অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকরা সরব হন। স্বৈরাচার সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত থাকা শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছিলেন অধ্যক্ষ। 


এর প্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জ জেলা শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত দিলেও রহস্যজনক কারণে নিরব ভূমিকা পালন করছে বলে অভিযোগ করেন প্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও অভিভাবকরা।  

অভিযোগে বলা হয়, নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ অভিবাবক ও শিক্ষকগণ প্রতিষ্ঠানে আমাদের কর্মকালীন অর্থ বছরের আর্থিক নিরীক্ষণ সম্পাদন পূর্বক দুর্নীতিকারী প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সায়মা খানম সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের নামে অবাধে প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনা করে গিয়েছেন। রাজনৈতিক প্রভাব থাকার ফলে আমরা অনেক বিষয়ে দুর্নীতি ও অনিয়ম লক্ষ্য করার সত্ত্বেও প্রতিবাদ করতে পারি নাই। বর্তমানে বাংলাদেশ স্বৈরাচার মুক্ত হওয়ায় আমরা উক্ত বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্ত চাই। নবীগঞ্জ গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের    অধ্যক্ষ সায়মা খানমের দুর্নীতির ধারাবাহিক বর্ণনা তুলে ধরেন। 


গত ২০/০৪/২০১৯ সালে নাসরীন ওসমান ডরংফড়স অঃঃরৎবং খঞউ ৪ অ/ঈ ঘড় ১০০৩১৪৬৭২৭১০১. ঘধৎধুধহমধহল ইৎধহপয. ওঋওঈ ইধহশ হতে চেক নং- ঈঅও ১৪৪৭১৯৭  মারফত অত্র প্রতিষ্ঠানে ১,৫০,০০,০০০/-এক কোটি পঞ্চাশ লাখ টাকা দান করেন, যা অত্র প্রতিষ্ঠানের সোনালী ব্যাংক, নবীগঞ্জ শাখার একাউন্ট নং- ৩৬১২৯৩৪০৩৪০৬৬ ও ২৯/০৪/২০১১ জমা হয়। গত ০৭/০৫/২০১৪- তারিখে চেক নং- বই ৩৬১২৬২৬৫৪৯০ এবং চাহিদা রেজিস্টারের ৫৭/০৫/২০১৬ তারিখের ভাউচার মোতাবেক উত্তোলনকৃত টাকা দিয়ে প্রতিষ্ঠানের জমি ক্রয় করা হয়। বন্দর সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের সাফ-কবলা দলিল নং- ৩৫১৫, তারিখঃ ১৪/০৫/২০১৯।  মোতাবেক নবীগঞ্জ 'ম খন্ড' মৌজায় নামজারি খতিয়ান নং- ৬৭৩ এর মূলে ৩৭.৪৭ শতাংশ আমি ৬১,২০,০০০/- একষট্টি লক্ষ বিশ হাজার টাকার মূল্যে মোঃ আলাউদ্দিন হতে এ কে এম সেলিম ওসমান ক্রয় করেন। পরবর্তীতে দানপত্র দলিল নং- ৩৯২০, তারিখ ২৮/০৫/২০১৯। দলিল মূলে এ কে এম সেলিম ওসামন জমিটি নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের নামে দান করেন। উল্লেখ্য যে, উক্ত দানকৃত জমির রেজিস্ট্রি ও হস্তান্তর সংক্রান্ত আনুষঙ্গিক ব্যয় দানকারী সাবেক সংসদ সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান নিজে বহন করেন এবং একটি তিন তালা বিল্ডিং নিজ অর্থায়নে করে দেন। চাহিদা রেজিস্টারে বিভিন্ন ভাউচায়ে একই জমি বায়না, যেজিস্ট্রি ক্রয় ও ভরাট বাবদ অর্থ উত্তোলনের একাধিক চাহিদা রয়েছে। 

২০২২/২১ সাল পর্যন্ত নির্দিষ্ট কোন বেতন কার্ড না রশিদ বহি ব্যতীত শিক্ষার্থীদের ভর্তি ফি, বেতন, রেজিস্ট্রেশন ও ফরম ফিলাপ ফি গ্রহণ করা হয়। বিদ্যালয়ের আর্থিক কার্যক্রম পরিচালনার করার জন্য কোন ক্যাশ বহি নেই। কোন প্রকার প্রমাণক না একই মাসের বেতন একাধিকবার প্রদান করতে হয়েছে। অভিভাবকবৃন্দ টাকা আদায়ের রশিদ চাওয়ায় অসদাচরন করেন এবং বলেন "আপনার মেয়েকে অন্য স্কুলে নিয়ে যান" পাশাপাশি ভর্তি বাতিলের হুমকি প্রদান করেন। বিভিন্ন শিক্ষকদের ভর্তির অর্থ আদায়ের দায়িত্ব দিয়ে উনাদের হতে টাকা গ্রহণ করে বাসায় নিয়ে যান, যা পরবর্তীতে ব্যাংকে জমা হয় নাই এবং ক্যাশ বহি না থাকায় এই টাকার হিসাব পাওয়া যায় নাই। 

শিক্ষক-কর্মাচারীদের বেতন-ভাতাদি প্রদানে বিলম্বতা ও অনিয়ম লক্ষ্য করা যায়। বিভিন্ন সময়ে হিসাবের ঘাটতি মিলানোর জন্য কমিটি ও শিক্ষক-কর্মচারীদের নিয়ে ভ্রমণের আয়োজন করা হতো। উক্ত ভ্রমণে কমিটির সদস্য ও পরিবার বর্গ এবং শিক্ষক-কর্মচারীবৃন্দ বিনামূল্যে ভ্রমণ করতেন। ২০২০ সালে করোনার লক ডাউন চলাকালীন ভ্রমন ব্যাতীত বিল করার অভিযোগ পাওয়া যায়। আমরা জানতে পারি কমিটির সদস্যগণ বিদ্যালয়ের আয় ব্যয়ের হিসাব প্রদানের কথা বললে তিনি স্কুল থেকে বের করে দেওয়ায় পাশাপাশি কমিটি ভেঙ্গে দেওয়ার হুমকি প্রদান করেন। অত্র প্রতিষ্ঠানের নামে অগ্রণী ব্যাংক, টানবাজান ব্রাক এর একাউন্ট নং-০২০০০০৩২৪১৫৪৭ এর স্থিতিতে থাকা ৪১,২১৮/- একচল্লিশ হাজার দুইশত আঠারো টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করেছেন। 

উল্লেখ্য যে, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড, ঢাকা এর স্মারক নং- চাশিবো/বি/৭৭/ফরিদ/১০৫। ১৪/০৫/২০২৪ তারিখে (সংযুক্তি-৯) পত্রের ৩নং দফা মোতাবেক তদন্ত কর্মকর্তা উপ-বিদ্যালয় পরিদর্শক মোঃ আরিফুল হক উক্ত বিষয়গুলোর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন এবং বিগত ১০ বছরের আর্থিক অনিয়ম অডিট করার আবেদন করেন। সূত্রত্ব পর অনুযায়ী তদন্তে অত্র প্রতিষ্ঠানের সহকারি শিক্ষক (গণিত) উম্মে সালমা ৪.৫৪৬৫৫/- পাঁচ লক্ষ চুয়ান্ন হাজার আটশত পঞ্চান্ন টাকা অনৈতিভাবে আটকিয়ে রাখা হয়েছিল। নিয়ম মোতাবেক উচ্চতার স্কেল পাওনা হয়, যা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে আটকিয়ে রেখে ছিলেন। উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবে নিজ পছন্দের শিক্ষক নিয়োগ প্রদানের জন্য সহকারী শিক্ষক (গণিত)  উম্মে সালমা বভবৎং জধসরষড়ৎ যোগদানপত্র, প্যাটান ভিত্তিত শিক্ষক (তথ্য বিবরণী) ছক) এবং স্বাক্ষর জালিয়াতি করে কপিতে কবি ঝবপঃরড়হধষ প্যাটান তথ্য বিবরণী ছকে আবশ্যিক শিক্ষক সালমাকে মাসিক বেতন প্রদান করছেন না।  সেপ্টেম্বর ২০২৩ হতে অদ্যবধি সহকারি শিক্ষক গণিত ৪৭৭,৬০০- চার লক্ষ সাতাত্তুর হাজার এবং ১০১৬ হতে অদ্যবধি সালমাকে বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট হতে বঞ্চিত করায় ছয়শত টাকা অর্থিক ক্ষতি হয়। বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ইংরেজি  রওশন আরা মীম ৬ মাসের অন্তসত্ত্বা থাকাকারীন প্রধান শিক্ষক প্রসুতি ছুটি গ্রহণের জন্য বলেন, তখন তিনি ক্লাস করাতে পারায় শিক্ষার্থীদের মান বজায় রাখতে ক্লাশ চালিয়ে যাওয়ার কথা জানান। প্রধান শিক্ষকের কথা মতো ছুটি না নেওয়ায় তিনি সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) রওশন আরা মীমকে ইচ্ছাকৃতভাবে বিদ্যালয়ের ৬ তলা ভবনের বিভিন্ন তলায় একাধিক ক্লাস প্রদান করেন, যা একজন অন্তসত্বা নারীর পক্ষে কষ্ট সাধ্য।  সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) রওশন আরা মীম মেডিকেল ছুটি দাবী করলে তিনি বারবার প্রসূতি ছুটি নেওয়ায় কথা বলে। এইভাবে অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে তিনি সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) রওশন আরা মীমকে প্রসূতি ছুটি গ্রহণের বাধ্য করেন। সহকারী শিক্ষক (ইংরেজি) জনাব রওশন আরা মীম এর প্রতি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষণের এমন আচরণ মানবিক লঙ্ঘনের শামিল। তাছাড়া বিদ্যালয়ের সাধারণ অভিভাবকযুক্ত দুর্নীতি দমন কমিশন এর চেয়ারম্যান ময়েদেহের বরাবর আবেদন জানালেও তারা কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নাই। 

উক্ত বিষয়াদির সতাতা যাচাই করার জন্য নবীগঞ্জ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বিগত ১০ বয়সের আর্থিক নি করে দুর্নীতি প্রমাণ হলে দুর্নীতিকারীর বিরুদ্ধে যথাযন ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা অফিসার মহোদয়কে বিশেষভাবে অনুরোধ করেন। 

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে নবীগঞ্জ গালর্স স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সায়মা খানমের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোনকল রিসিভ করেনি।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭