সোনারগাঁয়ে করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত যোদ্ধারা অবহেলিত - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

শনিবার, ৯ মে, ২০২০

সোনারগাঁয়ে করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত যোদ্ধারা অবহেলিত


সোনারগাঁয়ে করোনা পরিস্থিতির প্রকৃত যোদ্ধারা অবহেলিত





নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নোবেল করোনা ভাইরাস মোকাবেলায় নিবেদিত প্রাণ সেচ্ছাসেবী হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলার সোনারগাঁ উপজেলায় কাজ করে চলেছে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন। এদের বেশির ভাগই বয়সে তরুণ।





করোনা সংক্রমণের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় গত ২৫ মার্চ থেকে সোনারগাঁয়ে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষকে দেখা যায়। প্রকৃতপক্ষে প্রায় ৭ লক্ষ ভোটারের এই উপজেলায় করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জনপ্রতিনিধি,প্রশাসন,সরকারি কর্মকর্তা,পুলিশ পর্যাপ্ত না থাকায় ২৬ মার্চ বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনের সাংসদ জননেতা লিয়াকত হোসেন খোকার পরামর্শে উপজেলা প্রশাসন অফিশিয়াল ভাবে সোনারগাঁয়ের ২৫-৫০ বছর বয়সী স্বেচ্ছাসেবক  আহবান করে। এমপি খোকার আহবানে সাড়া দিয়ে উপজেলা প্রশাসনের সাথে স্বেচ্ছা শ্রমের ভিত্তিতে কাজ করতে প্রায় ৮ শত স্বেচ্ছাসেবী ফরম জমা দেন উপজেলা প্রশাসনের কাছে।





এরপর ৫ এপ্রিল রবিরাব উপজেলার কাঁচপুরে করোনা ভাইরাসের লক্ষণ নিয়ে মারা যাওয়া মৃত ব্যক্তির দাফন কাফনে আত্মীয় স্বজন, সমাজের বিত্তবান, সরকারি বেতন ভুক্ত ইসলামী ফাউন্ডেশনের ইমামসহ অন্য কেউ এগিয়ে না আসলে ৩ জন সাংবাদিক মোঃ নুর নবী জনি,সাংবাদিক কামরুজ্জামান রানা,অপর সাংবাদিক হাবিবুর রহমান ও স্বেচ্ছাসেবী জহিরুল ইসলামসহ মোট ৪ জন স্বেচ্ছাসেবী ঐ মৃত ব্যক্তিকে গোসল করিয়ে কবর দেয়ার কাজে এগিয়ে আসলে মূলত স্বেচ্ছাসেবীদের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবন করে সবাই। সোনারগাঁয়ে প্রথম কোন করোনা উপসর্গ নিয়ে মৃত ব্যক্তির জানাজায় প্রশাসনের পক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম,সোনারগাঁ থানা পুলিশের ২ জন সদস্য ছাড়া অন্য কাউকে দেখা যায়নি। এছাড়া পরবর্তীতে সোনারগাঁয়ে আরো দুজন করোনা আক্রান্ত রোগী মারা গেলে সেখানেও স্বেচ্ছাসেবীরাই দাফন কাফন ও কবর দেয়ার কাজে নিয়োজিত ছিল। করোনা আতংকে আপনজনদের ফেলে রাখা লাশ বাড়ি থেকে বের করা,গোসল করানো, কাফনের কাপড় পরানো থেকে শুরু করে কবর দেয়া পর্যন্ত সব কাজই করেন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবকরা৷









কাঁচপুরে প্রথম লাশ গোসল, দাফন ও কবরস্থ করার কাজে সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন এবং পুরো কাজ গুলো সম্পন্ন করেন সাংবাদিক ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী মোঃ নুর নবী জনি,কামরুজ্জামান রানা,স্বেচ্ছাসেবী জহিরুল ইসলাম ও অপর সাংবাদিক হাবিবুর রহমান, ইমরান ও আব্দুস সাত্তার প্রধান৷





পরবর্তীতে শম্ভুপুরা ও মোগরাপাড়া ইউনিয়নে মারা যাওয়া মৃত ব্যক্তিদের দাফন কাফন ও কবর দেয়ার সময়ও তাদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেলেও নতুন করে স্বেচ্ছায় শ্রম দিয়ে কবর ও লাশ গোসল করাতে যুক্ত হোন বৈদ্যেরবাজার ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ সানাউল্লাহ,ওমর ফারুক,মোগরাপাড়া ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবী সৈয়দ আরিফুর রহমান রাকিব, সাংবাদিক রাকিবুর রহমান,মুহিবুল্লাহ,আলী আকবর ও গোলজার হোসেন,শেখ এনামুল হক বিদ্যুৎ শেখ ও রিপন সরকার।









পাশাপাশি উপজেলার হোম কোয়ারেন্টাইন, সামাজিক দূরত্ব, হ্যান্ড মাস্ক, মাস্ক ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং জরুরি প্রয়োজনে অসহায় মানুষের পাশে সরকারী যেকোন সহায়তা পৌঁছে দিতে প্রতিটি ইউনিয়নে গঠিত হয় স্বেচ্ছাসেবী টিম।





টিমের স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে সোনারগাঁয়ের মোগরাপাড়া,চৌরাস্তা,মেঘনা শিল্পনগরী,কাঁচপুর, নয়াপুর,তালতলা,বারদী,অলিপুরা,বাংলাবাজার,আদমপুর,পৌরসভা,আনন্দবাজার,বৈদ্যেরবাজার,কাইকারটেক, দুধঘাটা,হোসেনপুর কাঁচাবাজারসহ মোট ২০ টি কাঁচাবাজার স্থানান্তর ও মনিটরিংয়ের কাজ করে।





বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও এনজিও প্রদত্ত ত্রান সামগ্রী সমাজের সুবিধা বঞ্চিত ও ঘরবন্ধি মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেও স্বেচ্ছাসেবীরাই মূল ভূমিকা পালন করে৷ রাত দিন খেটে প্যাকিং করে তা নির্দিষ্ট মানুষের হাতে তুলে দেন তারাই। স্বেচ্ছাসেবী কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে গিয়ে অমিত হাসান মিরাজ নামে একজন স্বেচ্ছাসেবী নিজেই করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। আরো ১৫-২০ জন স্বেচ্ছাসেবী হোম কোয়ারেন্টাইনে আছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।





সোনারগাঁয়ের মাটি ও মানুষের নেতা লিয়াকত হোসেন খোকার নির্দেশে ১০ টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভাসহ মোট ১১টি টিম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলামের নেতৃত্বে কাজ করছে।









সরকারি কোন সহযোগিতা না পেলেও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নিরলস কাজ করে চলেছেন। পরিবার-পরিজনের কথা চিন্তা না করে মানুষের পাশে গিয়ে বিভিন্ন সচেতনতামূলক কাজ পরিচালনা করছেন। কেউ কেউ আবার ব্যক্তিগত উদ্যোগে খাদ্য সামগ্রী পৌঁছে দিচ্ছে অসহায় মানুষের ঘরে ঘরে। তাদের নাম নাই কোন সরকারি তালিকায়। তাদের জন্য ঘোষণা করা হয়নি কোন প্রণোদনা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে তাদের অনেকের ঘরে খাদ্য সামগ্রীর সংকট রয়েছে, তারপরেও সবকিছু উপেক্ষা করে মানুষের জন্য কাজ করে চলেছে। এই মহামারী রোধ করতে হয়তো তাদের কোন সামর্থ্য নাই, তারপরও নিজেদের ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষকে সচেতন করতে নিরলস প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। যাতে এই করোনার মরণ ছোবল থেকে বাঁচতে পারে,ও বাঁচাতে পারে।





সর্বোপরি এমপি জননেতা লিয়াকত হোসেন খোকা,  উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ সাইদুল ইসলাম ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) আল-মামুনের নিকট সচেতন মহলের দাবী উপজেলার সকল স্বেচ্ছাসেবীদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করে স্বেচ্ছাসেবী কাজের ব্যাপকতা বাড়িয়ে সোনারগাঁকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭