প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে রিসোর্স সেন্টারের ভূমিকা ফারজানা ববী - আজকের সংবাদ

সদ্য পাওয়া

Home Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

Post Top Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭

বুধবার, ১৫ জানুয়ারী, ২০২০

প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে রিসোর্স সেন্টারের ভূমিকা ফারজানা ববী


প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নে রিসোর্স সেন্টারের ভূমিকা
ফারজানা ববী





আজকের সংবাদ ডেস্কঃ প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পেশাগত দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য চাকরিকালীন প্রশিক্ষণ কার্যক্রমের মাধ্যমে দক্ষ শিক্ষক হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে মানসম্মত প্রাথমিক শিক্ষা বাস্তবায়নের পথ সুগম হচ্ছে। ৫০৫টি থানা ও উপজেলায় প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচির (১৯৯৭-২০০৪) আওতায় আইডিয়াল ও নরওয়ের সাহায্যপুষ্ট প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প তিনটির অর্থায়নে থানা ও উপজেলায় রিসোর্স সেন্টার স্থাপিত হয়।





বাংলাদেশে ২০০০ সালে সর্বপ্রথম চারটি ইউআরসি/টিআরসি স্থাপিত হয়। বর্তমানে ৫০৫টি ইউআরসি/টিআরসি রাজস্ব খাতের আওতাভুক্ত রয়েছে। ইউআরসি/টিআরসিগুলোর মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ধারাবাহিক প্রশিক্ষণ ও অ্যাকাডেমিক সহায়তা প্রদান করার মাধ্যমে শিক্ষকদের চাকরিকালীন পেশাগত দক্ষতার উন্নয়ন। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ সরকারিভাবে দেশের বিভিন্ন পিটিআইগুলোতে দেড় বছর মেয়াদি ডিপিএড প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে থাকেন। পরবর্তীতে তাদের পিটিআইতে রিফ্রেশ প্রশিক্ষণ করার আর সুযোগ হয় না। শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ প্রদান ও বিদ্যালয়গুলোতে অ্যাকাডেমিক তত্ত্বাবধান করার মাধ্যমে ইউআরসি/টিআরসি প্রাথমিক শিক্ষকদের জন্য পেশাগত সহায়তা কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।





ইউআরসি/টিআরসিতে প্রশিক্ষণ সামগ্রী প্রণয়ন, তৈরি, ব্যবহার ও সংরক্ষণ করা হয়ে থাকে। প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা হয়। সঠিক পদ্ধতি ও আধুনিক বিভিন্ন কৌশল প্রয়োগ করার মাধ্যমে শিক্ষকদের শিক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনায় সহায়তা করা হয়ে থাকে।





সিইনএড/ডিপিএড প্রশিক্ষণ ছাড়া অন্যান্য প্রশিক্ষণ লাভের পর শিক্ষকগণ তা যথাযথভাবে বিদ্যালয়ে প্রয়োগ করছেন কি না তা ইউআরসি/টিআরসি কর্মকর্তাগণ বিভিন্ন বিদ্যালয় পরিদর্শন করার মাধ্যমে পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন করে থাকেন। বিদ্যালয়গুলোর পরিদর্শন মূল্যায়ন ফলোআপ করে থাকেন। বিদ্যালয় পরিদর্শনের মাধ্যমে শিক্ষকদের উন্নয়নের ক্ষেত্র চিহ্নিত করার মাধ্যমে ফলাবর্তন ও সহায়তা প্রদান করে থাকেন।





পাঠ সমীক্ষার মাধ্যমে শিক্ষকদের সবল ও দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে, তা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষকদের শিক্ষক হওয়ার যোগ্যতাগুলো অর্জন করাতে উদ্বুদ্ধ করা হয়ে থাকে। পাঠ সংশ্লিষ্ট যথাযথ উপকরণের চাহিদা শনাক্তকরণের মাধ্যমে সহজলভ্য উপকরণ সংগ্রহ, তৈরি, ব্যবহার ও সংরক্ষণের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের সৃজনশীল কাজে উদ্বুদ্ধ করার মাধ্যমে বিভিন্ন উপকরণ প্রস্তুত করার লক্ষ্যে ইউআরসি/টিআরসি কর্মকর্তাগণ শিক্ষকদের পরামর্শ ও সহায়তা প্রদান করে থাকেন।





বিদ্যালয় ও শ্রেণি ব্যবস্থাপনায় শিক্ষক যোগ্যতার প্রয়োগ নিশ্চিতকরণে সহায়তা করে থাকেন। ইউআরসি/টিআরসি কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয় উন্নয়নে নিবিড়ভাবে শ্রেণি পাঠদান পরিদর্শন ও পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি সামাজিক সহযোগিতা লাভ তথা এসএমসি, পিটিএ, মা সমাবেশ, অভিভাবক সমাবেশ, উঠান বৈঠক, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বিদ্যোৎসাহী, শিক্ষানুরাগীদের বিদ্যালয়ের সাথে সম্পৃক্ততা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন।





নতুন নতুন ইনোভেশনমূলক কার্যক্রম যথা : প্রতি প্রশিক্ষণে দেয়ালিকা প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষকদের লেখালেখির অভ্যাস গঠন, বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের পড়ার আগ্রহ বৃদ্ধির জন্য বাড়ির কাজের পাশাপাশি পেপার কর্নার স্থাপন, রিডিং প্রতিযোগিতা করা, প্রতি বিদ্যালয়ে ইংলিশ ল্যাঙ্গুয়েজ ক্লাব গঠন ও তার কার্যক্রম বাস্তবায়ন, বিদ্যালয়ে প্রতিটি জাতীয় দিবসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের লেখা দিয়ে বাধ্যতামূলক দেয়ালিকা প্রকাশ, শিক্ষকদের উপকরণ ব্যবহার নিশ্চিত করার লক্ষ্যে প্রত্যেক শিক্ষকের জন্য উপকরণ ঝুড়ির ব্যবহার নিশ্চিতকরণে সহায়তা ও পরামর্শ প্রদান করার মাধ্যমে কার্যক্রমগুলো বাস্তবায়ন করে থাকেন।





শিক্ষক চাহিদার ওপর ভিত্তি করে মানসম্মত চাহিদাভিত্তিক সাবক্লাস্টার তথ্যপত্র প্রণয়ন করে থাকেন এবং সাব-ক্লাস্টার প্রশিক্ষণ পরিদর্শন করে কার্যকরী পরামর্শ প্রদান করে থাকেন। কর্ম সহায়ক গবেষণার মাধ্যমে পাঠদান ও শিক্ষার্থী সংক্রান্ত সমস্যা অনুসন্ধান করে এর সমাধানের পথ বের করে থাকেন। নব নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ ও মেন্টরিংয়ের মাধ্যমে ফলপ্রসূ পাঠদানে আগ্রহ সৃষ্টি করে থাকেন। ইউআরসি/টিআরসি কর্মকর্তাগণ বিদ্যালয় ও শ্রেণিকক্ষ সজ্জিতকরণের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয় ও পাঠের প্রতি আগ্রহী করে তুলতে সহায়তা করে থাকেন।





এ ছাড়াও বিভিন্ন সময়ে জারিকৃত পরিপত্রের আলোকে কার্যক্রমগুলো বিদ্যালয়ে যথাযথভাবে পালন করা হচ্ছে কি না তা মনিটরিংয়ের মাধ্যমে তত্ত্বাবধান করে থাকেন। মাঠ পর্যায়ে শিক্ষকদের অতি নিকটে ইউআরসি/টিআরসির অবস্থান। শিক্ষকদের বিভিন্ন একাডেমি ভিত্তিক সমস্যা এবং এর সমাধান করার লক্ষ্যেই ইউআরসি/টিআরসি চিন্তা ভাবনা করে থাকে। ইউআরসি/টিআরসি কর্মকর্তাগণ চাকরিকালীন পেশাগত উন্নয়নমূলক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বিকেন্দ্রিকরণ, বিদ্যালয়গুলোতে নিবিড় পরিদর্শন, ফলাবর্তন প্রদান ও ফলোআপ করার মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মান ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

Post Bottom Ad

বিজ্ঞাপনের জন্য যোগাযোগ করুন ০১৯২৬৮৭০৭২৭